ট্রেডমার্ক লঙ্ঘন ও তার আইনি প্রতিকার
যখন কেউ তার নামে ট্রেডমার্ক নিবন্ধন করে, তখন সে কিছু একচেটিয়া আইনি অধিকার অর্জন করে। আর কেউ সেই ট্রেডমার্ক অন্যের অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করলে, সেটা আইনগতভাবে ট্রেডমার্ক লঙ্ঘন (Trademark Infringement) বলে গণ্য হয়। বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে এই ধরনের লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে মামলা করার এবং প্রতিকার পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
ট্রেডমার্ক লঙ্ঘন কি?
যখন কেউ:
- অন্যের রেজিস্টার্ড ট্রেডমার্ক অনুমতি ছাড়া বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে;
- একই রকম বা কাছাকাছি দেখতে এমন মার্ক ব্যবহার করে যেটা দেখে সাধারণ ক্রেতা বিভ্রান্ত হতে পারে;
- কোনো সেবা বা পণ্য নিজের নামে চালাতে চেষ্টা করে,
তখন তা ট্রেডমার্ক লঙ্ঘন হিসেবে গণ্য হবে। একে সাধারণ ভাষায় “নকল মার্ক” বা “ভুয়া ব্র্যান্ড” বলা যায়।
কোথায় মামলা করা যায়?

ট্রেডমার্ক লঙ্ঘনের জন্য সাধারণত তিনটি ফোরামে মামলা করা যায়:
- দেওয়ানি আদালত (সিভিল কোর্ট)
- ফৌজদারি আদালত (ক্রিমিনাল কোর্ট)
- হাইকোর্ট বিভাগ (বিশেষ পরিস্থিতিতে)
ট্রেডমার্ক আইন ২০০৯ অনুযায়ী প্রতিকার
ধারা ৯৬ ও ৯৭: দেওয়ানি মামলা
যদি কেউ অন্যের রেজিস্টার্ড ট্রেডমার্ক লঙ্ঘন করে, তাহলে রেজিস্টার্ড মালিক জেলা জজ আদালতে মামলা করতে পারেন। এখানে আদালত:
- অস্থায়ী বা স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দিতে পারেন,
- ক্ষতিপূরণ আদায় করতে পারেন,
- নকল মার্ক বা লেবেল ধ্বংস করার আদেশ দিতে পারেন।
ধারা ৭৩ ও ৭৪: ফৌজদারি শাস্তি
কেউ যদি ভুয়া ট্রেডমার্ক ব্যবহার করেন বা এমন যন্ত্র রাখেন যেটা দিয়ে ট্রেডমার্ক নকল করা যায়, তাহলে তার:
- ৬ মাস থেকে ২ বছর পর্যন্ত জেল,
- ৫০ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা,
- আবারও একই অপরাধ করলে শাস্তি আরও বাড়তে পারে।
ধারা ৭৬, ৭৭, ৭৮: অন্য ধরণের প্রতারণা
যেমন:
- অ-নিবন্ধিত ট্রেডমার্ককে নিবন্ধিত বলে চালানো,
- ব্যবসায়িক স্থানে ট্রেডমার্ক অফিসের নাম ব্যবহার করা,
- রেজিস্ট্রেশন বইতে মিথ্যা তথ্য দেওয়া ইত্যাদি অপরাধের জন্যও জেল-জরিমানার বিধান রয়েছে।
দেওয়ানি প্রতিকার
1. নিষেধাজ্ঞার দরখাস্ত (Injunction)
- অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা: মামলার চলাকালীন সময়ে মার্ক ব্যবহার থেকে বিরত রাখতে।
- স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা: প্রমাণ হলে স্থায়ীভাবে ট্রেডমার্ক ব্যবহার বন্ধ করতে।
2. ক্ষতিপূরণ দাবি (Compensation)
যদি প্রমাণ হয় যে, অন্য কেউ তার ট্রেডমার্ক নকল করে ব্যবসায়িক ক্ষতি করেছে, তাহলে ক্ষতিপূরণ চাওয়া যায়। আদালত সন্তুষ্ট হলে তা আদায়ের আদেশ দেন।
ফৌজদারি প্রতিকার (দণ্ডবিধি, ১৮৬০ অনুসারে)
- ধারা ৪৮২: ভুয়া ট্রেডমার্ক ব্যবহার করলে ১ বছর পর্যন্ত জেল।
- ধারা ৪৮৩: নকল মার্ক ব্যবহার করলে ২ বছর পর্যন্ত জেল।
- ধারা ৪৮৫: নকল করার যন্ত্র থাকলে ৩ বছর পর্যন্ত জেল।
- ধারা ৪৮৬-৪৮৭: মিথ্যা মার্কসহ পণ্য বিক্রি করলে বা প্যাকেটে মিথ্যা তথ্য থাকলে জেল ও জরিমানা।
TRW Law Firm-এর সেবা
TRW Law Firm ইতোমধ্যে অনেক ক্লায়েন্টের পক্ষ থেকে ট্রেডমার্ক লঙ্ঘনের মামলায় সাফল্যের সাথে প্রতিনিধিত্ব করেছে। আমরা:
- লিগ্যাল নোটিশ ইস্যু করি,
- দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলা পরিচালনা করি,
- ক্ষতিপূরণ ও নিষেধাজ্ঞা আদায়ে সহায়তা করি,
- হাইকোর্টে রিট আবেদন করি বিশেষ পরিস্থিতিতে।
লিগ্যাল নোটিশ দেওয়া কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
মামলা করার আগে ট্রেডমার্ক লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো অনেক ক্ষেত্রেই কার্যকর হতে পারে। এতে:
- বিষয়টা শান্তিপূর্ণভাবে মিটে যেতে পারে,
- ভবিষ্যতের সাক্ষ্য হিসেবে কাজ করতে পারে,
- আদালতে শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করে।
তবে এক্ষেত্রে দক্ষ আইনজীবীর পরামর্শ নিয়ে স্ট্র্যাটেজি তৈরি করে নোটিশ দেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
উপসংহার
আজকের প্রতিযোগিতামূলক বাজারে ব্র্যান্ড ভ্যালু রক্ষা করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই ব্যবসার নাম, লোগো, বা স্লোগান সঠিকভাবে ট্রেডমার্ক করে রাখা উচিত। কেউ যদি আপনার ট্রেডমার্ক নকল করে, তাহলে TRW Law Firm আইনি প্রতিকারের জন্য আপনার পাশে আছে। আমরা আপনাকে পুরো প্রক্রিয়া চালাতে সাহায্য করবো—নোটিশ থেকে শুরু করে মামলা, ক্ষতিপূরণ থেকে শুরু করে নিষেধাজ্ঞা আদায় পর্যন্ত।
আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:
TRW Law Firm
ফোন নম্বর:
+8801708000660
+8801847220062
+8801708080817
ইমেইল:
info@trfirm.com
info@trwbd.com
info@tahmidur.com
অফিস লোকেশন:
ঢাকা: হাউস ৪১০, রোড ২৯, মোহাখালী ডিওএইচএস
দুবাই: রোলেক্স বিল্ডিং, এল-১২, শেখ জায়েদ রোড
ট্রেডমার্ক নিয়ে কোনো সমস্যা? TRW Law Firm-এ আজই যোগাযোগ করুন এবং নিশ্চিত থাকুন আপনার ব্র্যান্ডের সুরক্ষা নিয়ে।