TRW Law Firm - Enhanced Mega Menu 2025 Edition with Logo & Contact Sidebar

Let's work together

TRW Global Law Firm

Legal excellence across continents

Our global presence

Dhaka Headquarters
House 410, Road 29, Mohakhali DOHS
Dhaka 1206, Bangladesh
Dubai Regional Office
Rolex Building, L-12 Sheikh Zayed Road
Dubai, United Arab Emirates
London Liaison Office
330 High Holborn, London, WC1V 7QH
United Kingdom

What we do best

Cross-Border Transactions
International business deals, mergers & acquisitions, and regulatory compliance across multiple jurisdictions.
Multi-Jurisdictional Litigation
Complex legal disputes spanning Bangladesh, UAE, UK, and other international territories.
Global Corporate Structuring
Strategic legal advice for multinational corporations establishing presence in emerging and developed markets.
Schedule a consultation

ভরণপোষণ সংক্রান্ত আইন

ভরণপোষণ সংক্রান্ত বিধিবিধান জানার আগে ভরণপোষণ কি সেটা আমাদের জানা দরকার। ভরণপোষণ হচ্ছে মানুষের জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, ইত্যাদি মৌলিক চাহিদা।

একজন সক্ষম এবং উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তার স্ত্রী, নাবালক ছেলে-মেয়েদের ভরণপোষণ দিতে সবসময়ই বাধ্য।

স্ত্রীর ভরণপোষণ:

আমরা এটা অনেকেই জানি যে মুসলিম বিয়ে একটি দেওয়ানি চুক্তি। এই চুক্তির ফলে স্বামী-স্ত্রী একত্রে বসবাস ও সংসার পালন করেন। বিয়ের ফলে কিছু আইনগত অধিকার যেমন যেমন সৃষ্টি হয় তেমনি কিছু দায়িত্বও সৃষ্টি হয়। এই দায়িত্বগুলোর মাঝে ভরণপোষণ অন্যতম ।

ভরণপোষণ হচ্ছে স্বামীর জন্য দায়িত্ব এবং স্ত্রীর জন্য অধিকার। বৈবাহিক সম্পর্কের জন্য থাকা-খাওয়া, পোশাক-পরিচ্ছদ, চিকিৎসা ও জীবনধারণের জন্য অন্যান্য যে যে উপকরন লাগবে স্ত্রী তা স্বামীর কাছ থেকে পাওয়ার অধিকারী হন। এই অধিকার স্ত্রী যখন স্বামীর সঙ্গে বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ থাকবে তখন তো থাকবেই, তেমনি কোনো কারনে যদি বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে বিবাহ-বিচ্ছেদের পরেও তা বলবত থাকবে।

তবে বিবাহ-বিচ্ছেদের পরে এটি একটি সীমিত অধিকার এবং সীমাবদ্ধ সময় পর্যন্ত বহাল থাকে। মুসলিম আইনে স্ত্রীর উপর স্বামীর ব্যাপারে কিন্তু একই দায়িত্ব অর্পণ করা হয়নি। কারণ ধরেই নেয়া হয় যে, বেশিরভাগ মেয়েরা বাবা বা স্বামীর ওপর আর্থিকভাবে নির্ভরশীল। যদিও বতর্মানে বাস্তবতা অনেক পরিবর্তন হয়েছে। সে কারণেই স্ত্রী স্বামীর কাছ থেকে ভরণপোষণ পাবেন কিন্তু স্বামী স্ত্রীর কাছ থেকে কোনো ভরণপোষণ পাবেন না।

বিবাহ-বিচ্ছেদের পরে ভরণপোষণ:

যদি কোনো কারণে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে বিবাহ-বিচ্ছেদ ঘটেই যায় তাহলে বিবাহ-বিচ্ছেদের পরও স্ত্রী কিছুদিন ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকারী হবেন। যেদিন থেকে বিবাহ-বিচ্ছেদ কার্যকরী হয় সেদিন থেকে ৯০ দিন।

বর্তমানে মুসলিম আইনের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে আমাদের দেশের আদালতগুলো বিশেষ করে উচ্চ আদালত উল্লেখযোগ্য ভুমিকা পালন করেছে। হিফজুর রহমান বনাম সামসুন নাহার বেগম এবং অন্যান্য (৪৭ ডি এল আর ১৯৯৫ পৃষ্ঠা ৫৪) মামলায় হাইকোর্ট বিভাগ সিদ্ধান্ত নেয় যে, “স্বামীর অবশ্যই তার তালাক প্রদানকারী স্ত্রীকে এমনভাবে ভরণপোষণ দিতে হবে যা তার জন্য প্রয়োজন, এমনকি ইদ্দতকালিন সময় পার হওয়ার পরেও এই যথাযোগ্য ভরণপোষণ দিতে হবে একটি অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য যতদিন পর্যন্ত সেই তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীর অন্য কোনো বিয়ে না হয়”। কিন্তু হাইকোর্ট বিভাগের এই রায়কে দেশের সবোর্চ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ দ্বারা রহিত করা হয়। এই একই মামলায় আপিল বিভাগ শেষ পর্যন্ত বিবাহ-বিচ্ছেদের পর তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে কেবল তিন মাস (৯০ দিন) অর্থাৎ ইদ্দতকালিন সময় পর্যন্ত ভরণপোষণ দেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

ভরণপোষণ আদায়ের ক্ষেত্রে স্ত্রীর আইনগত যে অধিকার রয়েছেঃ

প্রথমত, ১৯৮৫ সালের পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ অনুযায়ী ভরণপোষণের জন্য স্ত্রীর মামলা করার অধিকার আছে। এটি একটি দেওয়ানি প্রতিকার। এই অধ্যাদেশে ভরণপোষণ, দেনমোহর, বিবাহ-বিচ্ছেদ, অভিভাবকত্ব ইত্যাদি বিষয়ে পারিবারিক আদালতে মামলা করার কথা বলা হয়েছে। পূর্বে ১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৮৮ ধারা অনুযায়ী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ভরণপোষণের মামলা দায়ের করা যেত। ২০০৯ সালে ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধন করে এই ধারাটি বাদ দেয়া হয়েছে। (সুত্রঃ বাংলাদেশ গেজেট, ৮ এপ্রিল ২০০৯)।

দ্বিতীয়ত, ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশের ৯ ধারায় বলা আছে, স্বামী স্ত্রীকে ভরণপোষণ দিতে ব্যর্থ হলে স্ত্রী স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে এই বিষয়ে আবেদন করতে পারবেন। চেয়ারম্যান সালিশি পরিষদ গঠন করে ভরণপোষণের পরিমান ঠিক করবেন এবং সার্টিফিকেট ইস্যু করবেন। স্বামী এরপরেও নির্ধারিত ভরণপোষণ না দিলে স্ত্রী বকেয়া ভুমি রাজস্বের আকারে তা আদায় করতে পারবেন।

আইনে বলে হয়েছে, যদি স্ত্রী কোন যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া স্বামীর কাছ থেকে আলাদা বসবাস করেন সেক্ষেত্রে স্বামী তাকে ভরণপোষণ দিতে বাধ্য না। তবে কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণে আলাদা বসবাস করলে স্বামী ভরণপোষণ দিতে বাধ্য। এই সিদ্ধান্তটি নেয়া হয়েছিল মোঃ ইব্রাহিম হোসেন সরকার বনাম মোসা. সোলেমান্নেসা ( ১৯৬৭, ১৯ ডি এল আর পৃষ্ঠা ৭৫১) মামলায়।

যুক্তিসঙ্গত কারণগুলোর মাঝে হতে পারে যেমন- দেনমোহর আদায়ের জন্য আলাদা বসবাস অথবা স্বামীর নিষ্টুর আচরণ, অত্যাচার বা ধর্ম পালনে বাধা প্রদানের কারণে আলাদা বসবাস ইত্যাদি আরও অনেক যুক্তিসঙ্গত কারণে আলাদা বসবাস করলেও স্ত্রী ভরণপোষণ পাবেন।

মুসলিম বিবাহ-বিচ্ছেদ আইন, ১৯৩৯ অনুযায়ী স্বামী দুই বছর ধরে ভরণপোষণ প্রদানে ব্যর্থ হলে বা অবহেলা করে ভরণপোষণ না দিয়ে থাকলে স্ত্রী বিবাহ-বিচ্ছেদের ডিক্রি পাওয়ার অধিকারী হবেন।

এক্ষেত্রে একটি মামলার কথা উল্লেখ্য করা যেতে পারে। মামলাটি হলো সাফুরা খাতুন বনাম ওসমান গনি মোল্লা(১৯৫৭) ৯ ডি এল আর, ৪৫৫। এই মামলায় বলা হয়েছিল যে, স্বামীর দেয়া ভরণপোষণ ছিল একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনার মতো । স্বামীর যে পরিমান ভরণপোষণ দেয়ার কথা ছিল, তার সামান্য পরিমান তাকা স্বামী পরিশোধ করত তাও আবার খুব অনিয়মিত। সুতারাং এক্ষেত্রে ধরা হবে যে, উক্ত স্বামী কাবিননামার শর্ত পালন করেননি এবং এ কারনেই স্ত্রী তালাক-ই-তৌফিজের ব্যাবহার করতে পারেন এবং বিবাহ-বিচ্ছেদের আবেদন করতে পারেন।

সন্তানদের ভরণপোষণ:

সন্তানদের ভরণপোষণ দেয়ার দায়িত্ব আইনগতভাবে বাবার। সাবালক হওয়া পর্যন্ত ছেলেকে এবং বিয়ের পূর্ব পর্যন্ত মেয়েকে বাবা ভরণপোষণ দিবেন। কোনো অসুস্থ ও অক্ষম সন্তান থাকলে তাদের ভরণপোষণও দিবেন বাবা। সাবালকত্ব অর্জন করার পরেও যদি সন্তানরা নিজ ভরণপোষণ যোগাতে ব্যর্থ হন তবে আইন অনুসারে ঐ সন্তান বাবার কাছে ভরণপোষণ দাবি করতে পারবে। তবে এক্ষেত্রে বাবা ভরণপোষণ দিতে বাধ্য নন। মা যখন সন্তানের জিম্মাদার তখনও বাবা ভরণপোষণ দিবেন।

Call us!