ব্যাংক হিসাবের চেক দ্বারা প্রতারণা বা চেক ডিজঅনারের মামলা
একজন ব্যক্তি অন্য কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান থেকে বিভিন্নভাবে প্রতারিত হতে পারে। তার মধ্যে একটি হচ্ছে চেক প্রতারণা। চেক একটি বিনিময়যোগ্য দলিল। বিনিময়যোগ্য দলিল হিসেবে ব্যক্তি একে অপর কে বা এক প্রতিষ্ঠান অন্য আরেক প্রতিষ্ঠান কে নির্দিষ্ট সেবা বা পন্যের বিনিময়ে প্রাপ্য মূল্য বা জামানত হিসেবে চেক প্রদান করতে পারেন। চেক প্রদানের ক্ষেত্রে অনেকে দূরবিসন্ধি মূলক চেক প্রদান করে থাকেন।
অর্থাৎ অপর পক্ষ কে তার প্রাপ্য অর্থ অথবা বিনিময় মূল্য না দিতে প্রতারণার আশ্রয় গ্রহণ করেন। এই প্রতারণা প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে। কিভাবে একজন ব্যক্তি চেক এর মাধ্যমে প্রতারিত হতে পারেন এবং চেক এর মাধ্যমে প্রতারিত হলে করনীয় কি বা কি পদ্ধতিতে প্রতিকার পাওয়া যায় সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করবো এই অনুচ্ছেদ এর মাধ্যমে।
চেক এর মাধ্যমে কিভাবে প্রতারিত হতে পারেন তা জেনে নিই – চেক প্রদানকৃত ব্যক্তির ব্যাংক হিসেবে টাকা না রেখে বা চেকে উল্লেখিত টাকার অংকের চেয়ে ব্যাংক হিসেবে টাকা কম রাখা অর্থাৎ অপর্যাপ্ত তহবিল, চেক প্রদান করে ব্যাংক হিসাব বন্ধ করে দেওয়া বা ব্যাংক কে Stop Pay Instruction দিয়ে রাখা, চেকের নির্দিষ্ট স্বাক্ষর ব্যতিত ভিন্ন স্বাক্ষর দেওয়া অর্থাৎ ত্রুটিপূর্ন স্বাক্ষর, চেকে উল্লেখিত টাকার অংক কে অন্য কোন সংখ্যা সংযুক্ত করার মাধ্যমে, চেকে টাকার পরিমাণ অংক ও কথায় ভিন্নভাবে লেখা, কোন কিছুর বিনিময়ে জামানত হিসেবে খালি চেক প্রদান করা বা জামানত হিসেবে প্রদানকৃত চেক ফেরত চাইলে তা না দিয়ে প্রতারণা করতে পারেন যে কেউ।
এছাড়াও ব্যাংকিং ক্ষেত্রে ঋণের বিপরীতে সিকিউরিটি হিসেবে নেওয়া চেক এর কারণেও আপনি বিপদে পড়তে পারেন।
চেক ডিজঅনার বা চেক দ্বারা প্রতারিত হলে করনীয় কি?
চেক দ্বারা প্রতারিত হলে প্রথম যে কাজটা করা যায় তা হচ্ছে স্থানীয়ভাবে মীমাংসার চেষ্ঠা করা। স্থানীয়ভাবে মীমাংসা না হলে একজন বিজ্ঞ অ্যাডভোকেট এর শরণাপন্ন হওয়া।
চেক মামলা থেকে বাচার উপায়
চেক দ্বারা প্রতারণা একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। চেক দ্বারা প্রতারিত হলে ক্ষেত্র বিশেষে দুই ভাবে প্রতিকার পাওয়া যায় । প্রথমত বিশেষ আইন – The Instrument Act 1881(হস্তান্তরযোগ্য দলিল আইন ১৮৮১) এর ১৩৮ ধারা অনুযায়ী এবং দ্বিতীয়ত মূল আইন – The Penal Code 1860 (দণ্ডবিধি ১৮৬০) এর ৪০৬ ও ৪২০ ধারা অনুযায়ী।
বিশেষ আইন – The Instrument Act 1881(হস্তান্তরযোগ্য দলিল আইন ১৮৮১) এর ১৩৮ ধারা অনুযায়ী কিভাবে প্রতিকার পেতে পারি তা জেনে নিই।
প্রথমত, প্রদানকৃত চেক টি অবশ্যই চেকে উল্লেখিত তারিখের ৬ মাসের মধ্যে ব্যাংকে উপস্থাপন করতে হবে এবং ব্যাংক কর্তৃক উক্ত চেকটি প্রত্যখাত (প্রত্যাখানের লিখিত বিবরণ সহ) হতে হবে।
দ্বিতীয়ত, চেকটি ব্যাংক থেকে প্রত্যাখাত হয়ে ফেরত আসার ৩০ দিনের মধ্যে একজন বিজ্ঞ অ্যাডভোকেট এর মাধ্যমে আইনগত (লিগ্যাল) নোটিশ প্রদান করতে হবে চেক দাতা বরাবরে। নোটিশ পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে চেকদাতা যদি চেকগ্রহীতাকে অর্থ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয় তাহলে পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে চেকগ্রহীতা চেকদাতার বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবেন। অর্থাৎ চেকগ্রহীতার চেক প্রত্যাখাত হওয়ার পর থেকে ৩০+৩০+৩০ =৯০ দিন সময় পাবেন একটি চেক প্রত্যাখানের ( ডিজঅনার ) মামলা করার জন্য।
তৃতীয়ত, চেক প্রত্যাখানের (ডিজঅনার) মামলা করতে হয় নালিশী মামলার মাধ্যমে। অর্থাৎ চেক ডিজঅনার এর মামলা শুধুমাত্র আদালতে করা যাবে। কোনভাবে থানায় করা যাবে না।
চেক ডিজঅনার মামলার লিগ্যাল নোটিশ দেওয়ার পদ্ধতিঃ
ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রর্যাপ্ত টাকা না থাকায় চেক ডিজঅনারে হলে ৩০ দিন এর মাঝে চেক দাতাকে টকা পরিশোধের জন্য লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করতে হবে। লিগ্যাল নোটিশ তিন ভাবে দেওয়া যেতে পারে।
- নোটিশ গ্রহিতার হাতে সরাসরি নোটিশ প্রদান করে।
- ডাকযোগে চেক প্রদানকারীর ঠিকানায় এবং সর্বশেষ বসবাসের ঠিকানায় প্রাপ্তি স্বীকারপত্র সহ নোটিশ প্রদান করে।
- সর্বশেষ কোনো জাতীয় বাংলা দৈনিকে নোটিশটি বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করে।এ তিন পদ্ধতির যে কোন একটা পদ্ধতি অনুসরণ করলে হবে।
অর্থাৎ চেকটি যে ব্যাঙ্ক বা অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আঁকা হয়েছে তাকে মেইল করে বা একটি চিঠি পাঠানোর মাধ্যমে একজন ব্যক্তি চেক অসম্মানের মামলার আইনি নোটিশ দিতে পারেন। এই চিঠিতে অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে যে ব্যাঙ্ক বা অন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান চেকটি পরিশোধ করেনি এবং নোটিশের কারণ ব্যাখ্যা করতে হবে।
আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পর্যাপ্ত টাকা না থাকার কারণে যদি একটি চেক সম্মানিত না হয়, তাহলে আপনি তিনটি উপায়ে আইনি নোটিশ পাবেন। আপনি একটি চিঠি পাঠাতে পারেন, পোস্ট করতে পারেন বা চেক পেয়েছেন এমন ব্যক্তিকে দিতে পারেন।
ডাক পরিষেবা প্রাপকের ঠিকানায় নোটিশ প্রদান করে। চেকের ড্রয়ার এবং নোটিশ প্রাপ্ত ব্যক্তির সর্বশেষ পরিচিত ঠিকানা উভয়ই নোটিশে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। জাতীয় বাংলা পত্রিকা বিজ্ঞপ্তিটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে।
চেক ডিজঅনারের মামলায় অপরাধের শাস্তিঃ
সকল সাক্ষ্য প্রমান, জেরা, যুক্তিতর্কের পর আদালত রায় প্রদান করবেন। অপরাধ প্রমান হলে আইন অনুসারে শাস্তি হিসেবে এক বছর কারাদন্ড অথবা চেকে উল্লেখিত অর্থের তিনগুণ পর্যন্ত অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত করতে পারেন।
চেক ডিজঅনার মামলার করার জন্য যে সকল কাগজ প্রত্র আদালতে দাখিল করতে হবেঃ
১। মামলার আরজী/ দরখাস্ত।
২। লিগ্যাল নোটিশ এর ফটোকপি ।
৩। লিগ্যাল নোটিশ প্রেরনের ডাক রশিদ এবং এ.ডি এর ফটোকপি।
৪। মূল চেকের ফটোকপি।
৫। ডিসঅনার স্লিপ এর ফটোকপি।
৬। অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র।
মামলা দায়েরঃ
ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়েরের পর ম্যাজিস্ট্রেট মামলা আমলে নিয়ে বিবাদী বরাবর সমন ইস্যু করবেন। ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক ইস্যুকৃত সমন অনুযায়ী বিবাদী যদি হাজির না হয় তাহলে পেপারে বিজ্ঞপ্তি দিবেন তারপরও হাজির না হলে ওয়ারেন্ট দিবেন এবং আসামী ধৃত হলে বা সমন অনুযায়ী হাজির হলে মামলাটি বিচারের জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবে এবং ম্যাজিস্ট্রেট মামলাটি বিচারের জন্য যুগ্ন দায়রা জজের নিকট পাঠিয়ে দিবেন।
যুগ্ন দায়রা জজ কর্তৃক বিচারকালে চেক প্রতারণার বিষয়টি প্রমাণিত হলে শাস্তি হিসেবে দিতে পারেন সর্বোচ্চ ১ বৎসর পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা চেকের সমপরিমাণ বা তিনগুন অর্থদন্ড অথবা ঊভয়দন্ড । এইখানে একটা প্রশ্ন থেকে যায় তা হচ্ছে – চেকে উল্লেখিত অর্থের ২ (দুই) বা ৩ (তিন) গুন অর্থ যদি জরিমানা বা অর্থদণ্ড প্রদান করেন তাহলে চেকে উল্লেখিত অর্থের অতিরিক্ত টাকাগুলো কে পাবেন! তার উত্তর হচ্ছে – অতিরিক্ত টাকা গুলো সরকারি কোষাগারে জমা হবে।
আপীলঃ যুগ্ন দায়রা জজ কর্তৃক প্রদানকৃত শাস্তির বিরুদ্ধে আপীল করতে হবে দায়রা জজ আদালতে। তবে হস্তান্তরযোগ্য দলিল আইন ১৮৮১ এর ১৩৮ (ক) ধারা মোতাবেক আপীল দায়েরের পূর্বশর্ত হচ্ছে চেকে উল্লেখিত পরিমাণ অংকের কমপক্ষে ৫০% অর্থ আদালতের অনুকূলে জমা দিতে হবে। ৫০% অর্থ জমা ব্যতিত আপীল করা যাবে না। এবং ফৌজদারী কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ৪০৮ ধারা মোতাবেক আপীল দায়ের এর নিয়মগুলো অনুসরণ করতে হবে। ৪০৮ ধারার নিয়ম অনুসারে ৩০ দিনের মধ্যে আপীল দায়ের করতে হবে দায়রা জজ আদালতে।
অন্যদিকে চেকের নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে বা উপরে উল্লেখিত বিশেষ আইন অনুসারে মামলা করা সম্ভব না হলে তখন উপায় কি? এই ক্ষেত্রে কি প্রতারণার শিকার হওয়া ব্যক্তি আইনগত প্রতিকার থেকে বঞ্চিত হবেন? না। প্রতারণার শিকার হওয়া ব্যক্তি আইনগত প্রতিকার থেকে বঞ্চিত হবেন না। তিনি মূল আইন অর্থাৎ The Penal Code 1860 (দণ্ডবিধি ১৮৬০) এর ৪০৬ ও ৪২০ ধারা অনুযায়ী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রতারণার মামলা করতে পারবেন। উক্ত আইন এর ৪০৬ ধারা অনুযায়ী ৩ বৎসর পর্যন্ত এবং ৪২০ ধারা অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৭ বৎসর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। উক্ত দুইটি ধারায় থানায় এবং ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে উভয় স্থানে মামলা করা যাবে।
চেক ডিজঅনার মামলায় আপনাকে(বাদীকে) যে সকল বিষয় প্রমান করতে হবেঃ
চেক ডিজঅনারের মামলায় বাদীকে (যিনি প্রতারিত হয়েছেন ) অনেক বিষয় প্রমান করতে হয় এবং সে সকল বিষয় প্রমান করতে পারলে আসামীকে শাস্তি দেওয়া যাবে ।
১। আসামী বাদীকে চেক প্রদান করেছে ।
২। ঋণ বা দায়-দেনা পরিশোধের জন্য আসামী বাদীকে চেক প্রদান করেছে।
৩। ঋণ বা দায়-দেনা আসামী আইনুগভাবে পরিশোধ যোগ্য।
৪। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রর্যাপ্ত টাকা না থাকায় চেক ডিজঅনার হয়েছে।
৫। চেক ডিজঅনারে সময় থেকে ৩০ দিন এর মাঝে আসামীকে টাকা পরিশোধের জন্য
লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করা হয়েছে।
৬। আসামী নোটিশ প্রাপ্তির ৩০ দিনের ভিতরে চেকে উল্লেখিত টাকা বাদীকে পরিশোধ ব্যর্থ হয়েছে।
৭। আসামী ব্যাবসায়িক লেনদেনের কারনে বাদীকে চেক প্রদান করলে বাদীকে আসামীর সাথে তার ব্যাবসায়িক সম্পর্ক ছিল প্রমান করতে হবে।
চেক ডিজঅনারের মামলায় বাদী/আসামী মৃত্যু হলেঃ
অনেক বিশ্বাস করে যে চেক ডিসঅনার মামলার বাদী/বিবাদীর একজন মারা গেলে মামলাটি শেষ হয়ে যায়। এটি ধারা 138 এর অধীনে চেক অসম্মানের ক্ষেত্রে সত্য নয়। একটি চেক অসম্মান মামলা অন্যান্য সমস্ত ফৌজদারি মামলা থেকে সামান্য আলাদা এবং একটি দেওয়ানী বিষয় হিসাবে, বাদী বা বিবাদীর মৃত্যুর সাথে শেষ হয় না। বাদীর মৃত্যুর পর তার আইনগত প্রতিনিধি বাদীর সাক্ষী হিসেবে মামলা পরিচালনা করতে পারবেন। মামলা চলাকালীন আসামি মারা গেলে মামলাটি সংশোধন করে মামলা চলতে পারে। যদি মামলা চলমান থাকে বা মামলা দায়েরের আগেই বিবাদীর মৃত্যু হয়, বাদীর একমাত্র প্রতিকার হল বিবাদীর আইনী প্রতিনিধির বিরুদ্ধে দেওয়ানী আদালতে একটি পুনরুদ্ধার মামলা দায়ের করা।
চেক ডিজঅনারের মামলায় আপিলঃ
আদালতের রায়ের পরে চেক ডিজঅনারের মামলায় আপিল করার সুযোগ রয়েছে। ১৩৮ ধারায় চেক ডিজঅনার মামলায় প্রদও দন্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপীল করা যাবে। দায়রা জজ অথবা অতিরিক্ত দায়রা জজের দন্ডাদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট বিভাগে আপীল দায়ের করতে হবে এবং যুগ্ম দায়রা জজের দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে দায়রা জজের নিকট আপীল করা যাবে।
চেক ডিজঅনারের মামলায় আপীল করার পূর্বশর্তঃ
১৩৮ ধারায় চেক ডিজঅনার মামলায় প্রদও দন্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপীল করা্র আগে দন্ডাদেশের উল্লেখিত অর্থের ৫০% আদালতে জমা দিয়ে আপীল করতে হবে। ৫০% টাকা বিচারিক আদালতে জমা দিতে হবে অর্থাৎ যে আদালত শাস্তি প্রদান করেছেন সে আদালতে টাকা জমা দিতে হবে।
তাহমিদুর রহমান রিমুরা টি এল এস ল ফার্ম কর্তৃক চেক ডিজঅনারের মামলায় আইনী সেবা:
তাহমিদুর রহমান রিমুরা টি এল এস ল ফার্ম একটি সনামধন্য ‘ল’ চেম্বার যেখানে ব্যারিস্টারস , আইনজীবীর মাধ্যমে সকল বিষয়ে আইনগত সহায়তা, পরামর্শ প্রদান করে থাকে। কোম্পানির শেয়ার হস্তান্তর জন্য যে কোন প্রশ্ন বা আইনী সহায়তার জন্য আমাদের সাথে যোগাযোগ করুনঃ-
GLOBAL OFFICES:
DHAKA: House 410, ROAD 29, Mohakhali DOHS
DUBAI: Rolex Building, L-12 Sheikh Zayed Road
LONDON: 1156, St Giles Avenue, Dagenham
Email Addresses:
info@trfirm.com
info@tahmidur.com
info@tahmidurrahman.com
24/7 Contact Numbers, Even During Holidays:
+8801708000660
+8801847220062
+8801708080817