জি.আর (GR Case) ও সি.আর (CR Case) মামলা কি?
আইন ও বিচার ব্যবস্থা বেশ জটিল এবং সূক্ষ্ম বিষয়। অনেকের জন্য ফৌজদারি মামলার বিভিন্ন প্রক্রিয়া বোঝা কঠিন হয়ে পড়ে। বিশেষ করে, জি.আর (GR Case) ও সি.আর (CR Case) মামলা সম্পর্কে অনেকেরই পরিপূর্ণ ধারণা নেই। সংক্ষেপে বললে, থানায় দায়ের করা মামলা জি.আর মামলা এবং আদালতে দায়ের করা মামলা সি.আর মামলা।
ফৌজদারি কার্যবিধি অনুসারে, বাংলাদেশে অপরাধমূলক মামলাগুলোর দুটি প্রধান ধারা রয়েছে – জি.আর (General Register Case) ও সি.আর (Complaint Register Case)।

- জি.আর মামলা: থানায় দায়ের করা সাধারণ মামলা, যা পুলিশের মাধ্যমে তদন্ত করা হয়।
- সি.আর মামলা: আদালতে সরাসরি দায়ের করা মামলা, যেখানে ম্যাজিস্ট্রেট সরাসরি অভিযোগ গ্রহণ করেন ও তদন্তের নির্দেশ দেন।
এখন আমরা এই দুই ধরনের মামলার বিশদ ধাপ ও বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করবো।
সি.আর মামলার (CR Case) ধাপসমূহ
সি.আর মামলা হলো কমপ্লেইন্ট রেজিস্ট্রার (Complaint Register) কেস বা নালিশী মামলা। এটি সাধারণত তখন দায়ের করা হয় যখন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কোন অভিযোগ গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন বা বাদী চান যে আদালত বিষয়টি সরাসরি গ্রহণ করুক।
সি.আর মামলার প্রক্রিয়া:
- অভিযোগ দাখিল:
- বাদী আদালতে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
- ম্যাজিস্ট্রেট এটি পর্যালোচনা করেন।
- ২০০ ধারামতে জবানবন্দী গ্রহণ:
- অভিযোগকারীকে হলফনামার মাধ্যমে তার অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে হয়।
- ২০২ ধারার অধীনে তদন্তের নির্দেশ:
- যদি ম্যাজিস্ট্রেট মনে করেন যে তদন্ত প্রয়োজন, তবে পুলিশ বা অন্য কোনো সংস্থাকে তদন্তের নির্দেশ দিতে পারেন।
- ১৭৩ ধারার অধীনে তদন্ত রিপোর্ট:
- তদন্ত সংস্থা তাদের রিপোর্ট দাখিল করে।
- ২০৩ ধারায় মামলা খারিজ বা স্বীকৃতি:
- ম্যাজিস্ট্রেট যদি মনে করেন যে অভিযোগের ভিত্তি নেই, তবে মামলা খারিজ হতে পারে।
- অন্যথায়, আদালত চার্জ গঠন করেন ও বিচার প্রক্রিয়া শুরু করেন।
- নারাজি আবেদন:
- যদি বাদী পুলিশের রিপোর্টে সন্তুষ্ট না হন, তবে পুনঃতদন্তের জন্য নারাজি আবেদন করতে পারেন।
জি.আর মামলার (GR Case) ধাপসমূহ
জি.আর মামলা হলো জেনারেল রেজিস্টার (General Register) কেস। এটি সেইসব মামলা যা থানায় দায়ের করা হয় এবং পুলিশ তদন্ত করে। সাধারণত আমলযোগ্য অপরাধগুলো এই মামলার আওতায় পড়ে।
জি.আর মামলার প্রক্রিয়া:
- ১৫৪ ধারায় এফআইআর দায়ের:
- কোনো ব্যক্তি থানায় অভিযোগ জানালে তা FIR (First Information Report) হিসেবে গ্রহণ করা হয়।
- ১৫৬ ধারার অধীনে তদন্ত:
- পুলিশ অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে।
- অপরাধীকে গ্রেফতার করতে পারে (প্রয়োজনে)।
- চূড়ান্ত প্রতিবেদন বা চার্জশিট দাখিল:
- তদন্ত শেষে পুলিশ চার্জশিট বা চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করে।
- বিচার শুরু:
- আদালত চার্জ গঠন করে ও সাক্ষ্যগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু হয়।
আমলযোগ্য ও অ-আমলযোগ্য অপরাধ
বাংলাদেশে অপরাধ দু’টি প্রধান ভাগে বিভক্ত:
- আমলযোগ্য অপরাধ:
- পুলিশের অনুমতি ছাড়াই মামলা রুজু ও গ্রেফতার করা যায়।
- উদাহরণ: খুন, ডাকাতি, ধর্ষণ।
- অ-আমলযোগ্য অপরাধ:
- পুলিশের অনুমতি নিয়ে মামলা করতে হয়।
- উদাহরণ: মানহানি, হুমকি প্রদান।
জি.আর ও সি.আর মামলায় জামিন
জামিন হলো অভিযুক্তের আদালতে উপস্থিত থাকার নিশ্চয়তার বিনিময়ে মুক্তির অনুমতি।
জামিনযোগ্য ও অ-জামিনযোগ্য অপরাধ:
- জামিনযোগ্য অপরাধ: যেখানে অভিযুক্ত সহজেই জামিন পেতে পারেন।
- অ-জামিনযোগ্য অপরাধ: গুরুতর অপরাধ, যেখানে জামিন পেতে আদালতের অনুমতি প্রয়োজন।
জামিন সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ ধারাগুলো:
- ৪৯৬ ধারা: জামিনযোগ্য অপরাধে অভিযুক্তের জামিন পাওয়ার অধিকার।
- ৪৯৭ ধারা: অ-জামিনযোগ্য অপরাধে বিশেষ শর্তে জামিন পাওয়া যায়।
সম্পর্কিত কেস রেফারেন্স
- 5 DLR (FC) 154:
- জামিন হেফাজত থেকে মুক্তির অধিকার নিশ্চিত করে।
- 22 Bom 539:
- সাক্ষীদের হুমকির কারণে জামিন প্রত্যাখ্যান করা যায়।
আমাদের পরামর্শ
- আইনি সহায়তা গ্রহণ করুন: মামলা পরিচালনার জন্য দক্ষ আইনজীবীর সহায়তা নিন।
- জরুরি পরিস্থিতিতে আইনজীবীর পরামর্শ নিন: থানা মামলা নিতে অস্বীকার করলে আদালতে মামলা করুন।
- সঠিক আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করুন: অপরাধের ধরন বুঝে সঠিক মামলার ধরন নির্বাচন করুন।
TRW Law Firm আপনার আইনি সহযোগিতায় সবসময় পাশে আছে।
📞 যোগাযোগ করুন:
- +8801708000660
- +8801847220062
- +8801708080817
📧 ইমেইল করুন:
- info@trfirm.com
- info@trwbd.com
- info@tahmidur.com
🏢 অফিস ঠিকানা:
- ঢাকা: হাউস ৪১০, রোড ২৯, মহাখালী ডিওএইচএস।
- দুবাই: রোলেক্স বিল্ডিং, এল-১২, শেখ জায়েদ রোড।